চুয়েট নিউজ২৪ ডেস্কঃ
দেশব্যাপী চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সহ সব রাজনৈতিক সংগঠনকে বয়কটের ডাক দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এতে অংশ নিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(চুয়েট) শিক্ষার্থীরাও।
সম্প্রতি ১৬ জুলাই(মঙ্গলবার) আনুমানিক রাত ৯ টায় চট্টগ্রাম শহরের চাঁদগাও এলাকায় চুয়েট শিক্ষার্থীবাহী সাঙ্গুবাসে হামলা হয়। জানা যায়, এ হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত। এর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাচের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ সহ সব রাজনৈতিক সংগঠন কে বয়কটের আহ্বান জানাতে শুরু করেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে জানায়, যে সংগঠনের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেদের সহপাঠীদের উপরই হামলা চালাতে পারে, এমন সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে থাকতে পারে না। এতে আমাদের শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। এমন সংগঠন আমরা চাই না।
এ ব্যাপারে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী, আবু রায়হান আল বিরুনী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, চলমান কোটা আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে, চুয়েটে আমরা অত্র ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি ও সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকান্ড বয়কট করছি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, যারা এই বয়কট মানবেনা অথবা আন্দোলনের বিরোধী কোনো পদক্ষেপ নেবে, তাদেরকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অত্র ক্যাম্পাসে সর্বস্থানে সম্পূর্ণরূপে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।
পুরোকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাফুজুর রহমান মোহাব্বত বলেন, সারা বাংলাদেশে আজকের আন্দোলনে ছাত্রলীগ ও পুলিশের যৌথ এবং ন্যাক্কারজনক হামলায় বেশ কিছু আন্দোলনকারী নিহত হন এবং চুয়েটিয়ান সহ অনেকেই আহত হন। এছারা আজ রাতে চুয়েট বাসে ছাত্রলীগের হামলা হয় ও আমার বোনদের লাঞ্চিত করা হয়।তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি চুয়েটে সকল ছাত্র রাজনীতি ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড এখন থেকে নিষিদ্ধ থাকবে। এবং কোটা আন্দোলনের যৌক্তিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করব না।
আগামীকাল থেকে আমরা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আন্দোলন চালিয়ে যাব। যারা আমাদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে কাজ করবে তাকে সর্বাত্মক ভাবে বয়কট করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ০৫ মে সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন উচ্চ আদালত। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ মোট ৫৬ শতাংশ কোটা বহাল থাকছে। বিষয়টিকে বৈষম্য আখ্যা দিয়ে দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এরই প্রতিবাদ স্বরুপ, দেশজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ সহ সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি বয়কটের পোস্ট দিতে দেখা যায়।