মো: তানভীর আহমাদ
চুয়েটে ছেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত হলগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রাচীন ও গৌরবান্বিত একটি হলের নাম শহীদ মোহাম্মদ শাহ হল। বিগত অনেকদিন থেকেই শহীদ মোহাম্মদ শাহ হল এর শিক্ষার্থীদের একটি আবেদন ছিল তাদের হলে যেন একটি রিডিং রুম ও বড় পরিসরে হল লাইব্রেরীর ব্যবস্থা করা হয়। এতে করে তারা পড়াশোনার জন্য একান্ত নিরিবিলি পরিবেশের সুযোগ পাবে। আগে থেকেই হলে একটি ছোট লাইব্রেরী থাকলেও সেখানে পর্যাপ্ত বই ও সুন্দর পরিবেশের ঘাটতি ছিল। তাছাড়া একটি রিডিং রুমের শূণ্যতা ছিল অনেকদিন ধরেই।
শিক্ষার্থীদের এই আবেদনকে আমলে নিয়ে শহীদ মোহাম্মদ শাহ হল এর প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান এর তত্ত্বাবধায়নে কাজ শুরু হয় হল লাইব্রেরী সমন্বিত রিডিং রুম গঠনের।
গত ১৩ আগস্ট হলটির শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ফেসবুক গ্রুপ “শাহ হল কমিউনিটি ,চুয়েট ” এ শাহ হল প্রভাস্ট হল লাইব্রেরী ও রিডিং রুম এর প্রাথমিক কিছু ছবি পোস্ট করেন এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে এর কার্যক্রম সম্পূর্নরুপে শুরু করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। এছাড়াও উক্ত লাইব্রেরী কে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলতে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সুচিন্তিত মতামত কামনা করেন ।
দীর্ঘদিন বন্ধের পর বিশ্ববিদ্যালয় খুললে হলের লাইব্রেরি নতুন করে আলোচনায় আসে। এসময় দৃষ্টিনন্দন লাইব্রেরি চুয়েটের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রশংসা কুড়ায়।
হলের বাসিন্দা চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগ এর চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাইনুল ইসলাম বলেন,” অনেক সময় রুমে পড়ার মত পরিবেশ থাকে না, রুমে মাঝে মাঝে থাকলে ঘুমাতেও ইচ্ছে করে। তবে সুন্দর এই লাইব্রেরী হওয়াতে সন্ধ্যার সময়টা পড়ার জন্য কার্যকর হবে। তবে অবস্থানের সময়টা একটু বাড়িয়ে দিলে ভালো হবে বিশেষ করে সারারাত ওখানে থাকলে একটু উপকার হবে বলে আমি মনে করি ।”
দৃষ্টিনন্দন এ লাইব্রেরি নিয়ে চুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জিবরান খন্দকার বলেন, “হলের আবাসিক ছাত্রদের অনেক দিনের দাবি ছিল এই হল লাইব্রেরি। সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রভোস্ট স্যারসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।”
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান চুয়েটনিউজ২৪ কে জানান -” অনেক দিন ধরেই এই হলের শিক্ষার্থীদের একটি চাওয়া ছিল যেন তাদের পুরাতন হল লাইব্রেরীকে সংস্কার করার পাশাপাশি একটি রিডিং রুম এর ব্যবস্থা করা হয়। তাদের প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করতে আসলে কোনো পরিশ্রমই আমার কাছে কষ্ট মনে হয় না। এখন থেকে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক এবং নন একাডেমিক সকল বই এর সুবিধা পাবে এই লাইব্রেরী থেকে। আগামী সপ্তাহ থেকে রিডিং রুম এর কার্যক্রম সম্পূর্ন রুপে শুরু হবে এবং শিক্ষার্থীরা তাদের এই লাইব্রেরী ব্যবহার করতে পারবে। “
এসময় তিনি লাইব্রেরী সংস্কারে সহযোগিতার জন্য হলের সহকারী প্রভোস্টদের এবং লাইব্রেরীর ডিজাইনার চুয়েট স্থাপত্য বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী নাতাশা করিম এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, হল লাইব্রেরীর কাজ জুলাই মাসে শুরু হয়ে আগস্টে শেষ হয়েছে বলে জানা যায়। তবে রয়েছে পর্যাপ্ত বই এর ঘাটতি। প্রাথমিকভাবে লাইব্রেরীকে বই দ্বারা সমৃদ্ধ করতে সাবেক শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার মাধ্যমে সহযোগিতার আহবান জানিয়েছেন হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান।