৮ দফা দাবীতে চুয়েট শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস বর্জন

চুয়েটনিউজ২৪ডেস্ক:

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ৮দফা দাবীতে অনলাইন ক্লাস বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

গত ৫জুলাই প্রথম বর্ষের (‘১৯ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের নিয়ে চুয়েটে পরীক্ষামূলক অনলাইন ক্লাস শুরু হয়। অনেক শিক্ষার্থীরই অনলাইন ক্লাস করার মত পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকায় তারা ক্লাস বর্জন করেছেন বলে জানা যায়।

শিক্ষার্থীরা জানান, অনেকেরই নেটওয়ার্ক সমস্যা কিংবা প্রয়োজনীয় ডিভাইস নেই। অনেকেই বাইরে গিয়েও ক্লাসে জয়েন করার চেষ্টা করেছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবী ক্লাস শুরুর পূর্বেই প্রয়োজনীয় ডিভাইস সকল শিক্ষার্থীকে নিশ্চিত করা, আর্থিক অসঙ্গতির দরুন যেসকল শিক্ষার্থী  প্রয়োজনীয় মোবাইল ডাটা কিনতে অক্ষম, সেসকল শিক্ষার্থীদেরকে চুয়েট থেকে ডাটা ক্রয়ের জন্য বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা করা, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে কোনো শিক্ষার্থী অনুপস্থিত হলে এটেন্ডেন্সের ব্যাপারে শিথিল হওয়া, এটেন্ডেন্সের জন্য বরাদ্দ মার্ক এসাইনমেন্টের  মাধ্যমে পূরণ করতে হবে যা জমা দেয়ার শেষ তারিখ টার্ম ফাইনালের আগের দিন পর্যন্ত দিতে হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের দাবী অনুপস্থিত শিক্ষার্থীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় অথবা বিভিন্ন কারণবসত যারা লাইভ ক্লাসে পড়া বুঝবে না তাদের জন্য লেকচারগুলো রেকর্ড করে ক্লিপ দেওয়া, অনলাইনে ক্লাস টেস্ট নেয়া থেকে বিরত থেকে সেটির বরাদ্দকৃত নাম্বার এসাইনমেন্টের মাধমে পূরণ করা, সকল ধরণের টার্ম ফাইনাল আপাতত স্থগিত রেখে ক্যাম্পাস খোলার পর যথাযথভাবে ডি এল দিয়ে পরীক্ষা নেয়া ইত্যাদি।

এছাড়া তারা জানান,ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু হবার পর ল্যাব কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য যথাযথ সময় দিয়ে নতুন শিডিউল করে ল্যাব কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরই ল্যাব কুইজ ভাইভা নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মানবিক দিক বিবেচনা সাপেক্ষে যেসকল শিক্ষার্থীরা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল তাদের জন্য স্টুডেন্ট লোনের ব্যবস্থা করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসন শিক্ষার্থীদরকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছে শুধু যার কোন প্রত্যক্ষ ফলাফল আমরা পাই নি। যার পরিপ্রেক্ষিত আমরা এই দাবীগুলো উপস্থাপন করছি এবং ক্লাস বর্জন করছি। আমরা সম্মিলিতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমাদের দাবী পূরণ না করা পর্যন্ত আমরা কেউই ক্লাসে যাচ্ছি না।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান  চৌধুরী বলেন, আসলে অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রমটা চালু করতে চাচ্ছে সরকার কিন্তু এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যদি ক্লাস বর্জন করে তাহলে তারা পরোক্ষভাবে সরকারের সিদ্ধান্তকে অবহেলা করছে। ব্যাপারটা মোটেও উচিত না। আমি অনেক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি, অনেকের ডিভাইস নাই,অনেকের ইন্টারনেট সুবিধা অপ্রতুল, অনেকের বৈদ্যুতিক সমস্যা। এসব দিক বিবেচনা করে তাদের দাবিদাওয়া গুলো যুক্তিযুক্ত। শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের জন্য যে কমিটি গঠন করা হয়েছে উনারা ব্যাপার গুলো দেখছেন। তবে আমরা আশাবাদী শীঘ্রই এসব সমস্যা সমাধান করে ক্লাসে ফিরে আসতে পারব।

তিনি আরও বলেন, এই মহামারীতে আসলে কাউকে কষ্ট দেয়ার জন্য অনলাইন ক্লাস না। যিনি ক্লাস নিবেন বা যারা ক্লাস করবেন সবারই মানবিক দিক থেকে নমনীয় হওয়া উচিত।