জিওন আহমেদঃ
অগ্রহায়ণের শেষার্ধে এসে পৌষ দিচ্ছে তার আগমনী বার্তা। এরই মধ্যে চুয়েট ক্যাম্পাসে শীতল বাতাসের প্রবাহ জানিয়ে দিচ্ছে শীত এর মৌসুম আসছে তার কুয়াশার চাঁদর নিয়ে। কিন্তু প্রায় ২০ মাস পর ক্যাম্পাসে কিসের যেন উষ্ণতার ছোঁয়া। কারণ, এই ১৭০ একরের প্রাণ ভোমরা, যাদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠে এই সবুজ স্বর্গ, সেই ছাত্রছাত্রীরাই যে ফিরে এসেছে তাদের প্রিয় শিক্ষা প্রাঙ্গনে। গত এক ডিসেম্বর সকল আবাসিক হল উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ১৭,১৮ এবং ১৯ ব্যাচের জন্য। তাই বলা যায় ক্যাম্পাস এখন সকল চলমান শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিপূর্ণ ।
করোনা মহামারীর সময়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে নানামুখী সাড়া জাগানো অনলাইন অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতা, ওয়েবিনার আয়োজনের ধারাবাহিকতায় গত ৪ ডিসেম্বর আইইইই স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চ চুয়েট আয়োজন করে বিদায়ী ২০১৯-২০২০ এক্সিকিউটিভ কমিটির বিদায় সংবর্ধনা এবং নৈশভৌজ। করোনা মহামারীর বন্ধের পর এটাই চুয়েট ক্যাম্পাসে কোনো সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত প্রথম কোনো আয়োজন।
গত ৪ ডিসেম্বর আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়েট কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রফেসর এবং আইইইই স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চ চুয়েটের এডভাইজর ড. মোহাম্মদ মশিউল হক। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আইইইই স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চের কাউন্সেলর, চুয়েট তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. নূর মোহাম্মদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড.মোহাম্মদ মশিউল হক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ব্যক্তিগত দক্ষতার পাশাপাশি নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, “একজন ইঞ্জিনিয়ারকে পুরো জীবন জুড়েই শেখার উপর থাকতে হয়। ঠিক এই কারণে আইইইই এর মতো টেকনিক্যাল অর্গানাইজেশনের বিকল্প নেই, বিদায়ী ব্যাচকে তাই ভবিষ্যতেও আমি আইইইই র সাথে সংযুক্ত থাকার পরামর্শ দিবো।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যের শেষে আয়োজনের সভাপতি ড. নূর মোহাম্মদ তাঁর বক্তব্যে বিদায়ী এক্সকমকে তার শুভেচ্ছা জানান এবং চলমান কমিটি যেন তাদের কার্যক্রম চলমান রাখে সেই বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিদায়ী আইইইই স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চ চুয়েটের ২০১৯-২০২০ সেশনের ব্রাঞ্চ চেয়ার অভিষেক দাস এবং আইইইই ডব্লিউআই ই এফিনিটি গ্রুপ চুয়েটের বিদায়ী চেয়ার মৌমিতা সেন শর্মা। বর্তমান কমিটির চেয়ার আসিফ মাহবুব উদ্দীনের উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের বক্তব্যপর্ব শেষ হয়।
বিদায় আয়োজনের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরের ন্যায় বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পরই ৬ ডিসেম্বর আয়োজিত হয় বিদায়ী নৈশভোজ। বিগত দিনের স্মৃতি রোমন্থনের মাধ্যমে পরস্পর আলাপচারিতায় মেতে উঠেন উপস্থিতরা। নৈশভোজ শেষে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন উপস্থিত সবাই। এভাবেই শেষ হয় নতুন পুরাতনের এই মিলনমেলা। পরবর্তি বছর আরো বড় আয়োজনে, আরো বড় কলেবরে আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করে একে একে বিদায় নেন উপস্থিত আইইইই স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চ চুয়েটের প্রাক্তন এবং বর্তমান সদস্যরা।