এমপির লোক আমরা, ভিসিও কিছু করতে পারবে না-চুয়েট শিক্ষার্থীকে ঠিকাদারের হুমকি

চুয়েটনিউজ২৪ ডেস্কঃ

সেন্ট্রাল রিসার্চ ল্যাব নির্মাণ কাজে সন্দেহের জের ও গাছ কাটার ছবি তোলায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এর দুই শিক্ষার্থীর সাথে অশোভন আচরণ ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ঐ ব্যক্তির নাম নাইম খান।

ইয়াকুব এন্ড ব্রাদার্স এবং এনকে ট্রেডার্স নামক দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে গবেষণাগারটির নির্মাণ কাজের দায়িত্বভার গ্রহণ করে।  জানা যায়, অভিযুক্ত নাঈম এনকে ট্রেডার্সের মালিক এবং যৌথভাবে পরিচালিত ভেঞ্চারটির পক্ষ থেকে কাজের দেখভাল করেন।

সোমবার (১৩ মে) দুপুর আড়াইটা নাগাত চুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদের বিপরীত পার্শ্বে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে। উপকেন্দ্রের গা ঘেষে বেশ জায়গা জুড়ে অনেক গাছগাছালী কেটে কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। এ অবস্থায় কাজের অসঙ্গতি ও বিপুল পরিমাণ গাছ কাটার ছবি তুলতে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (২০-ব্যাচ) শিক্ষার্থী শোভন লাল সরকার। 

শোভন জানান, সাবস্টেশনের পাশের জায়গায় কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে দেখে সে ছবি তুলতে যায়। হঠাৎ দুর থেকে কয়েকজন অচেনা লোক তেড়ে আসে তার হাতে থাকা ফোন কেড়ে নেওয়ার জন্য । এ সময়  নাঈমখান সহ তার বাকি সহযোগীরা শোভন লাল এ তার এক সহপাঠী সহ উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার ও মারমুখী আচরণ করে।

এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসলে ইলেকট্রনিক্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়ামের শার্টের কলার ধরে তাকে হুমকি দেয় নাইম খান। এসময় নাঈম খান বলেন , আমাদেরকে টিচার ফিচার ভাইবো না, এমপির লোক আমরা, ভিসিও কিছু করতে পারবো না আমাদের। এছাড়াও চুয়েটের নির্মাণাধীন উক্ত জায়গাটিকে তার নিজের প্রপার্টি বলে সম্বোধন করেন নাইম।

এ ঘটনায় তৎক্ষনাৎ সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালকগণ সেখানে উপস্থিত হয়ে নাঈম খানকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেন।  এসময় নাঈম খান নিজের দোষ স্বীকার করে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। 

এ বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. তারেকুল আলম জানান, এ ঘটনা একেবারেই প্রত্যাশিত নয়। যিনি কাজটি করেছে, সে আসলে বুঝতেই পারেনি তার কিভাবে কথা বলা উচিত ছিল, তাদেরকে অবশ্যই মার্জিত আচরণ করতে হবে। 

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ঠিকাদারকে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় এনে চুয়েটে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ সম্পর্কে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ড. রেজাউল করিম জানান, ছাত্রদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি পর্যালোচনা করা হবে। ভবিষ্যতে এ ধরণের কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, আমি ওই কন্ট্রাক্টর কে ডেকেছি। এ ধরনের আচরণ করলে সে কখনোই ওই সাইটে থাকতে পারবে না। তাকে ক্যাম্পাসে রেস্ট্রিকশন করে দেয়া হবে। এটা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেয়া যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *