চুয়েট ছাত্রলীগের ৭ নেতাকে একাডেমিক বহিষ্কার, ১২ নেতাকে হল বহিষ্কার

তানবির আহমেদ চৌধুরীঃ

জুলাই আন্দোলনে জনস্বার্থ বিরোধী অবস্থান ও ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ছাত্রলীগের ১৯ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাদের মধ্যে ১২ জনকে আবাসিক হল থেকে, ৪ জনকে দুই বছরের জন্য এবং ৩ জনকে এক বছরের জন্য সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ২ জনকে সতর্ক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গত ১১ মার্চ (মঙ্গলবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শৃঙ্খলা কমিটির ২৮৬তম সভার (জরুরি) সিদ্ধান্তক্রমে আজ সোমবার শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব ও ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত পৃথক ২১টি বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই-আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এবং তৎপরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ, কারণ দর্শানোর বিজ্ঞপ্তির জবাব এবং শিক্ষার্থী শৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

আবাসিক হল থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন চুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি তোফাইয়া রাব্বি, মো. সাদিকুজ্জামান, ইউসুফ আবদুল্লাহ, মো. তানভীর জনি, ইফতেখার সাজিদ ও শাকিল ফরাজী; সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তালহা জুবায়ের, মাহমুদুল হাসান, মো. রিফাত হোসাইন, মইনুল হক এবং সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইরফানুল করিম ও আবদুর রহমান জিহাদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে দুই বছরের জন্য এবং আবাসিক হল থেকে চিরতরে বহিষ্কৃতরা হলেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিজয় হোসেন, সহসভাপতি মো. ইমাম হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজহারুল ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌফিকুর রহমান।

এছাড়াও তিন শিক্ষার্থীকে ১ বছরের জন্য সকল একাডেমিক কার্যক্রম এবং চিরতরে আবাসিক হল থেকে বহিষ্কার করা হয়৷ তাঁরা হলেন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৌমিক জয়,সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুল ইসলাম ও তাহসিন ইশতিয়াক। তবে এ তিনজন যদি তাদের আইনসম্মত অভিভাবকের উপস্থিতিতে ১০ এপ্রিলের মধ্যে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোন কাজে অংশগ্রহণ করবে না মর্মে মুচলেকা দেয়, তবে তাদের ১ বছরের একাডেমিক বহিষ্কারাদেশ স্থগিত থাকবে। কিন্তু ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোন কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে এ বহিষ্কারাদেশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।

এসব শিক্ষার্থীর বাইরে আরও দুইজনকে কেবল সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাঁরা হলেন, চুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি চিন্ময় কুমার দেবনাথ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিব উদ্দিন চৌধুরী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়টি চুয়েটনিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থবিরোধী এবং বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে তাদের জড়িত থাকার লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়। এর প্রেক্ষিতে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। তাদের জবাব এবং অভিযোগের বিপরীতে পাওয়া তথ্য-প্রমাণের আলোকে শিক্ষার্থী শৃঙ্খলা কমিটি এ শাস্তি দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে যেই জড়িত থাকবে তাঁর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *