ইনজামাম উল হক:
দিনটি ছিল ৫ নভেম্বর। পুরো অস্ট্রেলিয়াজুড়ে ছড়িয়ে থাকা চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মিলিত হন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়ালেসে। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, চার বছরের প্রকৌশল শিক্ষাকালীন ক্যাম্পাসের সেই দিনগুলো একদিনের জন্য হলেও ফিরে পাওয়া। আড্ডা, গল্প আর সুরের মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও আবার সেই স্মৃতির দিনে বিচরণ করার আকাঙ্খা। ব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে প্রাক্তন চুয়েট শিক্ষার্থীরা মেতে উঠেছিলেন মিলন উৎসবে।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রাক্তন চুয়েট শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘অস্ট্রেলিয়ায় চুয়েটিয়ানরা’ প্রতি বছর আয়োজন করে এই পুনর্মিলনী উৎসবের। এবারের উৎসবের স্থান ছিল নিউ সাউথ ওয়ালেসের গালস্টন কমিউনিটি হল। প্রায় শতাধিক প্রাক্তন চুয়েট শিক্ষার্থী পরিবার-পরিজন সহ চলে আসেন উৎসব স্থলে। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির আহবায়ক কমিটির সমন্বয়কারী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান। পরে একে একে শুরু হয় পুনর্মিলনের অনুষ্ঠানসূচি।
সকাল ১১ টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল ছোটদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান ও দেশীয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে ছোটদের চকোলেট পার্টির মধ্যদিয়ে শেষ সকালের আয়োজন। দুপুরে ছিল ব্যান্ডদল ‘স্পর্শ’র সংগীত পরিবেশনা। এরপর উন্মোচন করা হয় সংগঠনটির ম্যাগাজিন এবং ওয়েবসাইট। সাথে সাথে গত এক বছরে সংগঠনটির কার্যক্রমও সবার সামনে তুলে ধরা হয়। সন্ধ্যার শুরুতে অনুষ্ঠিত হয় সংগঠনটির বার্ষিক সাধারণ সভা এবং গঠন করা হয় ১০ সদস্যের কার্যকরী কমিটি । সভা শেষে অনুষ্ঠিত হয় রাফেল ড্র , কাঁটা হয় কেক। পরে গ্রুপ ছবি তোলার মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রাক্তন চুয়েট শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলন উৎসব ।
পুনর্মিলন উৎসবে পার্থ থেকে যোগ দেন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হাসান জিয়াদ। কিভাবে এই পুনর্মিলন উৎসব হল, এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় চুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি ফেইসবুক গ্রুপ আছে। এর মাধ্যমেই আমরা একত্রিত হয়েছি।’ অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনী বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন চুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সুসান ফেরদৌস। পুনর্মিলন উৎসব শেষে নিজের অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন , এক কথায় বলতে পারি প্রোগ্রামটি খুবই উপভোগ্য ছিল। অনেকের সাথে দেখা হল ,কথা হল। এই প্রোগ্রামে না আসলে অজানাই থকে যেত যে, অস্ট্রেলিয়ায় চুয়েটের এত প্রাক্তন শিক্ষার্থী আছেন।’
অন্যরকম এই মিলনমেলা প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কিছুক্ষণের জন্য হলেও ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ক্যাম্পাস জীবনের অমলিন দিনগুলোতে। সেই দিকটাও তুলে ধরে সুসান ফেরদৌস বলেন, অনেকদিন পর মনে হল ক্যাম্পাসে বসে সিনিয়রদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি। এটি এক ধরণের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। দিনশেষে মনে হল, আমরা আসলে একটি পরিবার। আশা করি আজকের এই বন্ধন সবসময়ই অটুট থাকবে।
তারিখ: ১২. ১১. ১৬