মোহাম্মদ ইয়াসির আফনান:
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলন করেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। আজ বেলা ৩ ঘটিকা থেকে কাপ্তাই-রাঙ্গুনিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।
সারাদেশের চলমান বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির আওতায় এই আন্দোলনে যুক্ত হয় চুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা । প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কুয়েট-রুয়েট-বুয়েটের পর এবার আন্দোলনে যোগদান করেছে চুয়েট।
চলমান কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১ দফা দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চুয়েটের সকল সাধারণ শিক্ষার্থী।
এক দফা দাবীটি হলো,”সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে শুধুমাত্র অনগ্রসর জনগোষ্ঠী, আদিবাসী, নারী, প্রতিবন্ধীদের জন্য যথাযথ কোটা রেখে কোটা সংস্কার করতে হবে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্মের জন্য কতোখানি কোটা বরাদ্দ করা প্রয়োজন তা নিয়ে স্থায়ী সমাধানে আসতে হবে”
পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাশাক আল আবিদ বলেন, চুয়েটে ক্লাস বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। এমতাবস্থায় এ পর্যন্ত তারা যার যার অবস্থান থেকে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা যারা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছি তারা আজ আমাদের জায়গা থেকে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করছি। আমাদের দাবী একটাই৷ এই অযৌক্তিক ৫৬% কোটা বহাল না রেখে সুবিধাবঞ্চিত, প্রতিবন্ধী, আদিবাসী, নারী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্মের সন্তানদের জন্য যৌক্তিক কোটা আপ্যায়ন করা হোক। অর্থাৎ একটি সংগতিপূর্ণ কোটা সংস্কার করে মেধাবীদের দেশ গড়ার সুযোগ করে দেয়া হোক।
পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাফুজার রহমান মোহাব্বত বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও এই বৈষম্যমূলক কোটা আমরা সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পরিপন্থী বলে মনে করি। আমরা চাই সরকার সকল গ্রেডের চাকরিতে অনগ্রসর এলাকা, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটার প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ করে কোটা সংস্কার করবে৷
তিনি আরো বলেন ,”মুক্তিযোদ্ধা কোটা বৈষম্যমুক্ত দেশ গঠনের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের যে ত্যাগ,তাদের জীবনদান এর সাথে সাংঘর্ষিক বলে মনে করি৷ তাই তাদের তৃতীয় প্রজন্মের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংস্কার করে নির্বাহী আদেশ দিতে হবে। মোট কোটা ৫% এ সীমাবদ্ধ করতে হবে।”
উল্লেখ্য, গত ০৫ মে সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন উচ্চ আদালত। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ মোট ৫৬ শতাংশ কোটা বহাল থাকছে।