বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রতি কটুক্তির জেরে মধ্যরাতে উত্তপ্ত চুয়েট

নাজিফা তাসনিম জিফাঃ

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের দ্বারা বিএসসি প্রকৌশলীদের কটাক্ষের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে মিছিল করেন।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাত ১টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হন। তারা স্লোগান দিতে দিতে মিছিল শুরু করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক অতিক্রম করে পুনরায় স্বাধীনতা চত্বরে ফিরে আসেন। শিক্ষার্থীরা কোটা প্রথা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এবং সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (গ্রেড-১০) পদে আবেদন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সমতা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দাবি জানান।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অতিরিক্ত সুবিধা ও কোটা থাকার কারণে বিএসসি প্রকৌশলীদের চাকরির সুযোগ সীমিত হচ্ছে। তারা দাবি করেছেন, এই পদ ও সুযোগ শুধুমাত্র বিএসসি প্রকৌশলীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা উচিত।

চুয়েটে দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের মধ্যে চাকরি ও পদবীর ক্ষেত্রে বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলমান। বিশেষ করে গ্রেড-১০ পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অতিরিক্ত সুযোগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বিক্ষোভ চলাকালীন শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেন এবং স্লোগান প্রদান করেন। তাদের মূল দাবি হলো কোটা প্রথা বাতিল করা, চাকরিতে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই মুহূর্তে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।

শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের আন্দোলনের লক্ষ্য শুধুমাত্র ন্যায় ও সমান অধিকার নিশ্চিত করা। এই দৃঢ় অবস্থান চুয়েট ক্যাম্পাসে একটি সুসংগঠিত ও দৃশ্যমান প্রতিবাদ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

এ ব্যাপারে যন্ত্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহী আল ওয়াহিদ চুয়েটনিউজ২৪ কে বলেন, দশম গ্রেডের যেকোনো দায়িত্ব সহজেই পালন করতে পারেন বুয়েট–চুয়েট–কুয়েট–রুয়েট, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ বা স্বনামধন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা। প্রকৌশলী মানে হলো বিএসসি ডিগ্রিধারী, ‘ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ার’ নামে আলাদা কোনো পরিচয় আইনেও নেই। বিসিএস পরীক্ষা সবার জন্য উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা, এখানে টিকে থাকা নির্ভর করে যোগ্যতা ও দক্ষতার ওপর। ইচ্ছা করলে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাতেও অংশ নেওয়া যায়, তবে সেখানে বিশেষ কোটা দাবি করা যুক্তিসঙ্গত নয়। একইভাবে, প্রশাসন বা অন্য ক্যাডারে ইঞ্জিনিয়ারদের সুযোগ সীমিত করার কোনো কারণও নেই ।কিন্তু আজ এই প্রকৌশলীদের কুলাঙ্গার বলে হেয় করা হচ্ছে, আমাদের ন্যায্য দাবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে! যেখানে আমরা যোগ্যতার ভিত্তিতে ৯ম ও ১০ম গ্রেডের সব পদে নিয়োগ চাচ্ছি, যার পক্ষে মহামান্য আদালত কিছুদিন আগেই রায় দিয়েছে। সেখানে তারা ১০ম গ্রেডে ১০০% কোটা আর ৯ম গ্রেড এ ৫০% কোটার দাবি জানাচ্ছে! এটা সম্পূর্ণ আকাশ কুসুম এক আবদার! আমাদের এই আন্দোলন ততদিন চলবে যতদিন না প্রকৌশলীদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে ইনশাল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *