বিশ্বনবীকে কটুক্তির প্রতিবাদে চুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

তানভীর আহমাদঃ

বিশ্বমানবতার শ্রেষ্ঠ আদর্শ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্টে কটুক্তির ঘটনাকে ঘিরে ফুঁসে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। আজ ২০ শে জুন (শুক্রবার) জুমার নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন অত্র বিশ্ববিদযালয়ের শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, গত ১৯ জুন(বৃহস্পতিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিকস ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রুবাইয়েত ফেরদৌস আলভী (রোল নং: ২০০৮০১১) নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে মহানবী (সাঃ)-কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ও কটূক্তি করেন। পরবর্তীতে ওই পোস্টে আরও অবমাননাকর মন্তব্য করেন তিনি।

এই ঘটনায় চরম ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরই প্রেক্ষিতে, আজ জুমার নামাজ শেষে তারা “শাতিমের ঠিকানা—এই চুয়েটে হবে না”, “রাসুলের দুশমনেরা হুশিয়ার, সাবধান”, “নারায়ে তাকবির—আল্লাহু আকবার” প্রভৃতি স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদ সমাবেশ। উক্ত সমাবেশে দ্রুত অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কার, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও এর পাশাপাশি ভবিষ্যতে ধর্ম অবমাননা রোধে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

এ সমাবেশে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আদিল রায়হান বলেন, আজকে আমরা চুয়েটিয়ানরা একত্রিত হয়েছি, মূলত ধর্মীয় অবমাননা ও পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মোহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শানে কটুক্তির প্রতিবাদে। সম্প্রতি সংঘটিত এই ধরনের ঘটনাগুলো শুধুমাত্র ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য পীড়াদায়কই ছিলোনা বরং ক্যাম্পাসের, সমাজের ও রাষ্ট্রের জন্য এই ধরনের ঘটনাগুলো হুমকিস্বরূপ। তাছাড়া সামাজিক ও আইনগতভাবেও ধর্মীয় অবমাননা ন্যাক্কারজনক ও জঘন্যতম অপরাধ। এরই প্রেক্ষিতে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পাশাপাশি ক্যাম্পাসের সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে আমরা প্রশাসনের নিকট দায়ী ব্যক্তির আজীবন বহিষ্কার সহ, প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছি। পাশাপাশি, রাষ্ট্রের প্রতি এই দাবি জানিয়েছি, যেন ধর্মীয় অবমাননা ও ব্লাসফেমীর বিরুদ্ধে অতিসত্ত্বর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের আইন করা হয়।
হাজারো সালাম ও দরুদ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি। তাঁর সম্মান ও প্রশংসায় আমরা সর্বদা অটল। এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সম্মানের প্রশ্নে আমাদের জানমাল তুচ্ছ।

একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী আতফান বিন নূর বলেন,চুয়েট ক্যাম্পাসে সকল শিক্ষার্থীরা যে যেই ধর্মের হোক না কেনো অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ক্যাম্পাসের সকল মুসলিম শিক্ষার্থীর ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছে এমন কারো সাথে ক্যাম্পাস ভাগাভাগি করার মতো মানসিকতা কোনো চুয়েটিয়ানের নাই। ওর সর্বোচ্চ শাস্তি যেন হয়, ছাত্রত্ব বাতিল সহ সে যেন ক্যাম্পাসে আর কখনো ঢুকতে না পারে, প্রশাসনিকভাবে তাকে যেন নিষিদ্ধ করা হয় সেই দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড.মাহবুব আলম বলেন ,আমাদের একজন শিক্ষার্থী প্রিয়নবী (সাঃ) এর প্রতি যেই চরম বেয়াদবি প্রদর্শন করেছে সেই জঘন্য কাজের জন্য আমি মর্মাহত এবং আজ(শুক্রবার) বিকালের মধ্যেই আমরা এই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি।

উল্লেখ্য, বিশ্বনবী (সাঃ) কে অবমাননা ও কটুক্তিকারী রুবাইয়েত ফেরদৌস আলভীর বিরুদ্ধে পূর্ব থেকেই মরণঘাতী মাদক গ্রহণ ও হলে অসুদপায় কর্মকান্ডে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে বলে জানা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *