রাফাত হাসান দিগন্তঃ
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) আজ অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। আজ ১৫ই আগস্ট, বুধবার, বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে স্মরণ করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
আজ শোক দিবসের প্রথম প্রহরে চুয়েট স্বাধীনতা চত্ত্বর সংলগ্ন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা ও শোকের প্রতীক কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর পুরকৌশল বিভাগের সেমিনার কক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
চুয়েটের জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোঃ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. রণজিৎ কুমার সূত্রধর, পুরকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুর রহমান ভূঁইয়া, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. কৌশিক দেব, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম বলেন, আজ বাঙালির হৃদয়ভাঙা শোকের দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্ব-পরিবারে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল দেশের অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দেওয়া। কিন্তু প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী বুঝতে পারেনি যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা যায় না। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক বেশি শক্তিশালী। বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ ২৪ বছরের সংগ্রামের মাধ্যমে ব্যক্তি ‘মুজিব’ থেকে সকলের ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে ওঠেন।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম আরো বলেন, দেশে গত ৯ বছরে ৪৫০০ কোটি টাকা গবেষণা ও উন্নয়নকাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। আমরা এখন সবদিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ জাতি। আমাদের নিজেদের অর্থায়নে এখন বাজেট হচ্ছে। ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। বঙ্গবন্ধুকন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন উন্নত ও সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ঘটাতে হবে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রকৌশলী সমাজের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে বর্তমান সরকারের চলমান অগ্রযাত্রায় সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন, প্রভোস্টগণের পক্ষে শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ কামরুল হাছান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি প্রকৌশলী অচিন্ত কুমার চক্রবর্তী, কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোঃ জামাল উদ্দীন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মানবিক বিভাগের প্রভাষক নাহিদা সুলতানা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শোকাবহ ১৫ আগস্টের বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের উপর নির্মিত একক তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন সহকারী রেজিস্ট্রার (সমন্বয়) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান। পরে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টে নিহত সকলের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
তারিখঃ ১৫/০৮/২০১৮ ইং।

