চুয়েটনিউজ২৪ডেস্ক:
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতির গুণাগুণ দেখভাল করার জন্য ৮ সদস্যের দেশের একটি মনিটরিং দল রাশিয়ান ফেডারেশনে অবস্থান করছেন।
প্রকল্পে নিযুক্ত বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানির কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এই দলটি গঠিত। তারা হলেন নিউক্লিয়ার পাওয়ার এনার্জি ডিভিশনের ডিরেক্টর ও প্রধান প্রকৌশলী মাহমুদ হোসাইন, মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সৈয়দ মাসুদ রানা, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল হক ও মোঃ আহসানুল হাবীব, প্রকৌশলী মোহাম্মাদ শাহরিয়ার আশরাফ ও প্রকৌশলী মোঃ শামসুল আলম, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মাদ সাজ্জাদ দেওয়ান এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ইউনুস আলী।
তারা রাশিয়ান ফেডারেশনের সেন্ট পিটার্সবার্গ, মস্কো, ভলগাদনাস্ক ও পেট্রোজাবদ এলাকার বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে যন্ত্রপাতি নির্মাণ কার্যের দেখভাল করছেন।
গত ফেব্রুয়ারী মাসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজের অংশ হিসেবে এই দলটি রাশিয়াতে আসলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে আর দেশে ফেরত যেতে পারেনি। প্রকল্পের কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ঝুকি থাকা সত্ত্বেও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে ম্যানুফেকচারিং প্রসেস নিয়মিত দেখভাল করছেন তারা।
তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান এবং নিউক্লয়ার সেলের অ্যাটাসে শুভাশিস সরদার। তাদের সাথে সাথে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটম ও জেনারেল কন্ট্রাক্টর এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের মনোনীত বিশেষজ্ঞ দল, বাংলাদেশ পরমাণু নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মনোনীত বিশেষজ্ঞ দল ও ম্যানুফেকচারিং কোম্পানিগুলোর নিজস্ব কোয়ালিটি ডিপার্টমেন্ট আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে কাজ করছেন।
চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ান ফেডারেশনের বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্টে ৩০টি দীর্ঘমেয়াদি যন্ত্র তৈরী হচ্ছে। জানা যায়, কোন কোন যন্ত্র তৈরিতে প্রায় তিন বছর সময় লাগছে। ২০২২ সালের মধ্যেই রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থাপনায় এসব যন্ত্রপাতি সংযোজিত হবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্প থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে। এ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বিষেশায়িত ব্যক্তিবর্গ রাশিয়ায়র ম্যানুফেকচারিং প্লান্টসমূহ পরিদর্শন করেছেন এবং যন্ত্রগুলোর হালনাগাদ তথ্য সম্পর্কে অবহিত আছেন।
প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মাদ শৌকত আকবর জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য প্রস্তুতকৃত রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল এবং একটি স্টিম জেনারেটরের হাইড্রোলিক টেস্ট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে । এটি প্রকল্পটি নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। এ ছাড়া প্রথম ইউনিটের চারটি স্টিম জেনারেটরের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে দ্বিতীয় ইউনিটটির স্টিম জেনারেটরের তৈরির কাজ। আশা করা হচ্ছে, আগামী অক্টোবরের মধ্যে এর এসব যন্ত্র দেশে শিপমেন্ট হবে। প্রথম ইউনিটের প্রেসারাইজারের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে তা বাংলাদেশে শিপমেন্টের জন্য রাশিয়ার একটি সমুদ্র বন্দরে অপেক্ষমাণ। দ্বিতীয় ইউনিটের প্রেশারাইজারের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর বাইরে আগের নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী এ বছর প্রকল্পের অন্য যেসব যন্ত্রপাতির আসার কথা ছিল সেগুলোও সময়মতো পৌঁছে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পুরো কাজটিকে গুরুত্বের সাথে সার্বিক তত্ত্বাবধান করছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। সর্বশেষ নিউক্লিয়ার প্রযুক্তির ভিভিআর -১২০০ মডেলের দুটি রিঅ্যাক্টরের মাধ্যমে মোট ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে।
তারিখঃ ১৪.০৮.২০২০