প্রশংসায় ভাসছে জয়ধ্বনির অডিও থিয়েটার “ব্ল্যাকআউটে নতুন ভোর”

চুয়েটনিউজ২৪ডেস্ক:

করোনা মহামারিতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা যখন অচল তখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেন শুন্য মরুভুমি। নেই পড়াশোনার কোনো চাপ,নেই কোনো বিনোদন ব্যবস্থা। আর দীর্ঘদিন ঘরবন্দীর ফলে শিক্ষার্থীদের মনে বসেছে অশান্তির ছাপ,খুজে বেরিয়েছে একটু বিনোদনের ছোয়া।এমন বিষয়ের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সাংস্কৃতিক সংগঠন জয়ধ্বনির নিয়মিত কার্যকলাপের অংশ হিসেবে অডিও থিয়েটারের আয়োজন করা হয়। অডিও থিয়েটারের নাম দিয়েছেন “ব্লাকআউটে নতুন ভোর”।

সম্প্রচারের ২০ মিনিটের মধ্যেই তা সাড়া জাগিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,শিক্ষার্থীসহ সকলকে। প্রশংসায় ভাসছে থিয়েটারটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জয়ধ্বনির অফিসিয়াল পেইজে রাত ৯ টাই সম্প্রচারের পরপরই ফেসবুকে তা সাড়া জাগিয়েছে।

নাটকটির প্রধান চরিত্র ছিলো তাবাসসুম নামের একটি মেয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েটি সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে চোখের দৃষ্টি হারিয়ে ফেলে। তার মধ্যবিত্ত পরিবার চিকিৎসা এবং অপারেশন টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খায়। ঠিক তখনই অনেকগুলো সামাজিক সংগঠণ তাদের আর্থিক সাহায্যে এগিয়ে আসে। তেমনই একটি সংগঠন “ব্ল্যাকআউটে নতুন ভোর” নানা প্রতিকূলতা পার করে মেয়েটিকে সুস্থ করে তুলতে সচেষ্ট হয় এবং সফল হয়। মেয়েটি তার চোখের আলো ফিরে পেয়ে আবারো নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখার সুযোগ পায়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আর্থিক সেবায় এগিয়ে আসার কাহিনি নিয়ে নির্মিত হয় নাটকটি।

নাটকটির কাহিনি ও প্লট রচনা করেছে চুয়েটের ১ম বর্ষেশিক্ষার্থী নিলীশা ইসলাম। নাটকের পুরো চরিত্রে দেখা যায় প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের অনেক শিক্ষার্থীকে। তারা হলো-তাবাসসুম চরিত্রে ১ম বর্ষের অর্পিতা,রায়হান চরিত্রে ২য় বর্ষের অয়ন,রানুদিদি চরিত্রে ২য় বর্ষের অনুপমা, চঞ্চল চরিত্রে ২য় বর্ষের তাশদীদ,সোনালী চরিত্রে ১ম বর্ষের নীলিশা,আহমেদ সাহেব চরিত্রে ২য় বর্ষের সিদ্ধার্থ, নার্স চরিত্রে ২য় বর্ষের অর্পিতা সরকার, কাস্টমার চরিত্রে ১ম বর্ষের তানিম, মা চরিত্রে ১ম বর্ষের অনন্যা, ডাক্তার চরিত্রে ২য় বর্ষের সৌমিক , নিতু চরিত্রে ১ম বর্ষের মিতু,মাসুদ চরিত্রে ১ম বর্ষের ফুয়াদ,জয় চরিত্রে ১ম বর্ষের সপ্তক,পুলিশ চরিত্রে ৩য় বর্ষের তুর্জয়, সাব্বির চরিত্রে ১ম বর্ষের আরশাদ,বৃষ্টি চরিত্রে ১ম বর্ষের শ্রুতকীর্তি এবং রমা চরিত্রে ১ম বর্ষের রাফা প্রমুখ ।

সম্প্রচারের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই জয়ধ্বনির ফেসবুক পেইজে বাহবা জানিয়েছেন অনেকেই। প্রশাংসা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথাও লিখেছেন অনেকে। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশংসা কেড়েছেন নজরকাড়িয়ে।

এদিকে এমন অডিও থিয়েটার ধারণা নির্বাচন ও সম্প্রচারের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে জয়ধ্বনির সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন নোভেল বলেন, করোনাকালে ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক চর্চার ধারাকে বেগবান রাখতে মূলত জয়ধ্বনির এই আয়োজন। থিয়েটার টিম ক্যাম্পাসে থাকাকালীন ভালো ভালো থিয়েটার উপহার দিয়েছে। প্যান্ডেমিকের এই স্থবিরতার মাঝেও তারা তাদের ভালো কাজের ধারা ধরে রাখতে সচেষ্ট আছে। এই নাটকটি একটি মানবিক মূল্যবোধের জাগরণ হিসেবে আপনাদের সামনে উপস্থাপিত হয়েছে।একজন মানুষের খারাপ সময়ে কীভাবে আমাদের সবার একতাবদ্ধ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন সেই গল্পই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে নাটকে।আশা করি দুঃখসময়ে এবং অন্যের বিপদের সময়গুলোতে সকলেই এমনভাবেই এগিয়ে আসবে।