চুয়েটে কতটুকু প্রভাব ফেলছে মাদক প্রতিরোধ নীতিমালা ?

edited 2

চুয়েটনিউজ২৪ ডেস্কঃ

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) বাংলাদেশের প্রকৌশল শিক্ষার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি কমবেশি মাদক সংক্রান্ত সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে । তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সমস্যাটি চরম আকার ধারণ করে । এরই প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের শেষের দিকে চুয়েটে মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।

নীতিমালায় সচরাচর ব্যবহৃত বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন কিংবা সংরক্ষণের জন্য আজীবন হল বহিষ্কার সহ বিভিন্ন মেয়াদের একাডেমিক বহিষ্কারের বিধান রাখা হয়। তবে এসব শাস্তির ব্যবস্থা ক্যাম্পাসে মাদক প্রতিরোধে কতটুকু ভূমিকা রাখছে ?

চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ তাহারাত গালিব মনে করছেন যে নীতিমালাটি মাদক প্রতিরোধে তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। তিনি বলেন, নীতিমালা প্রণয়ন হওয়া সত্ত্বেও চুয়েটে মাদকসেবীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। মাদক প্রতিরোধে আবাসিক হলসমূহে নজরদারি বাড়ানো দরকার ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স ও টেলিযোগাযোগ কৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলামও একই মত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, নীতিমালাটি মাদক প্রতিরোধে কাজে আসছে না। যতই দিন যাচ্ছে,ক্যাম্পাসে মাদকের পরিস্থিতি ততই খারাপের দিকে যাচ্ছে। মাদক প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ানো জরুরী।

মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ নীতিমালার আওতায় চুয়েটে মাদক প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়। ছাত্রকল্যাণ পরিচালক উক্ত কমিটিতে সভাপতি হিসেবে এবং উপ-ছাত্রকল্যাণ পরিচালক সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ।

কমিটি গঠনের শুরুর দিকে মাদকদ্রব্য রাখার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর কয়েকটি কক্ষ সিলগালা করা হয় এবং কয়েকজন শিক্ষার্থীকে শাস্তিও প্রদান করা হয় । তবে সাম্প্রতিক সময়ে মাদক প্রতিরোধ কমিটির তেমন কোন কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে না । ফলে চুয়েটের মাদকসেবীরা অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

গত ১২ আগস্ট চুয়েটের এক শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু হলে অবস্থান করছেন জানিয়ে, মাদকদ্রব্য ও তা সেবনের কয়েকটি উপকরণসহ একটি ছবি নিজের ফেইসবুক একাউন্টে পোস্ট করেন। ফেইসবুকের মত একটি মাধ্যম , যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যরাও সক্রিয় ,সেখানে মাদক দ্রব্যের এই ধরণের খোলামেলা প্রচার, ক্যাম্পাসে মাদকের  খারাপ পরিস্থিতির ব্যাপারটাই তুলে ধরে।

তবে নীতিমালাটি প্রভাব ফেলছে না বলে শিক্ষার্থীরা যে দাবি করছেন তার সাথে একমত নন মাদক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব এবং পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জি এম সাদিকুল ইসলাম । তিনি বলেন, মাদক প্রতিরোধ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে বলেই সাম্প্রতিক সময়ে কিছু শিক্ষার্থীকে শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে ।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্যে কারা মাদকাসক্ত তা প্রশাসনের একার পক্ষে জানা সম্ভব না। মাদক প্রতিরোধে চুয়েটের সব স্তরের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি হল প্রশাসন এবং একাডেমিক বিভাগগুলোকেও একত্রে কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে মাদক প্রতিরোধ কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তারিখঃ ১৪/০৯/২০১৭ ইং